প্রকাশিত:
১ অক্টোবার ২০২৩, ১৭:৫৫
কেউ ছবি তুলছেন, কেউ সাধ্যমতো খাবার দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ তাকে দেখার জন্য ছুটে আসছেন আশপাশের এলাকা থেকে। হঠাৎ লোকালয়ে হনুমান দেখে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র কৌতূহল দেখা দিয়েছে।
গত প্রায় তিন মাস ধরেই নওগাঁর রানীনগর উপজেলার কুজাইল বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছে দলছুট এক মুখপোড়া হনুমান। নতুন পরিবেশে এসে হনুমানটি যেমন উদ্বিগ্ন ছিল, তেমনি হনুমানটিকে ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দারাও ছিলেন কৌতূহলী।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রথমদিকে হনুমানটি মানুষের কাছ থেকে দূরে দূরেই থাকত। গাছের ডালে, ঘরের চালে, ভবনের ছাদে ছিল তার বিচরণ। যাদের ঘরের চালে বা ভবনের ছাদে বিচরণ করত, তারাও থাকতেন আতংকে। তবে গত কিছুদিন ধরে হনুমানটির সঙ্গে স্থানীয়দের বেশ সখ্য গড়ে উঠেছে। কেউ কেউ আদর করে মুখে তুলে দিচ্ছেন খাবার।
শনিবার বিকেলে হনুমানটি ঘোরাফেরা করছিলেন কুজাইল নমঃশূদ্র পাড়ায়। এক পর্যায়ে ক্ষুধার্ত প্রাণীটি ঢুকে পড়ে ওই গ্রামের নরেশ সরকারের বাড়িতে। এসময় বাড়িতে থাকা লোকজন হনুমানটিকে আদর করে আটা গুলিয়ে খাওয়ান। এর আগে ওই গ্রামের বিকাশ প্রামাণিকের বাড়িতে ঢুকে বারান্দায় বালতিতে রাখা পানি খেতে দেখা যায়।
সুমন বসাক বলেন, ‘খাবারের সন্ধানে এটি মানুষের কাছে ছুটে এসেছে। অবুঝ প্রাণীটি যেহেতু বাড়িতে চলে এসেছে তাই খাবার দিয়েছি। আমরা তার কোনো ক্ষতি চাই না। কেউ তাকে বিরক্তও করে না। হয়তো আবার ফিরে যাবে তার আবাসস্থলে।’
স্থানীয় বিকাশ প্রামাণিক বলেন, খাবারের সন্ধানে মুখকালো হনুমানটি ছুটছে মানুষের বাড়িতে, কখনো গাছের ডালে। হনুমানটি খাদ্যের অভাবে দলছুট হয়ে এই এলাকায় চলে এসেছে। তবে সে কোথায় থেকে এসেছে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ তাকে দেখে খুব আনন্দ পাচ্ছে, খাবার দিচ্ছে। হনুমানটি যেন সবার আপনজন হয়ে উঠেছে।
নওগাঁ সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বনভূমি কমে যাওয়া, খাবার সংকটে অথবা পাচারকারীদের হাত থেকে পালিয়ে হনুমানটি লোকালয়ে চলে আসতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে হনুমানটিকে যেন কেউ ক্ষতি করতে না পারে। বন বিভাগের উচিত হনুমানটিকে কোনো বনে অবমুক্ত করা।
জেলা বন অফিসের সহকারী বন সংরক্ষক মো. মেহেদীজ্জামান বলেন, দলছুট হয়ে লোকালয়ে আসা হনুমানকে এলাকাবাসী যেন কোনো ক্ষতি বা বিরক্ত না করেন, সে বিষয়ে সবার সচেতনতা দরকার। হনুমানটি হয়তো আবার লোকালয় থেকে ফিরে যাবে। প্রয়োজনে এটিকে বনাঞ্চলে ছেড়ে দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া হবে।
প্রিয় নওগাঁ/এফএস
মন্তব্য করুন: