priyonaogaon@gmail.com সোমবার, ১০ই মার্চ ২০২৫, ২৬শে ফাল্গুন ১৪৩১
ব্রেকিং:
  • জানুয়ারি থেকে স্কুল-কলেজের সব শিক্ষকের এমপিও ইএফটিতে***, যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের সঙ্গে বসতে চান পুতিন***, রোববার শপথ নেবেন নতুন ইসি***, স্বচ্ছ নির্বাচন করে উদাহরণ সৃষ্টি করতে চান নতুন সিইসি***, জনগণ যাতে ক্ষমতার মালিক হতে পারেন তেমন দেশ গড়তে চাই: ড. ইউনূস***, এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া***, দুদকের তালিকায় ৩ শতাধিক প্রভাবশালী***,

পুলিশ হেফাজতে দুদক কর্মকর্তার মৃত্যু: দুই এএসআই প্রত্যাহার

দেশজুড়ে ডেস্ক

প্রকাশিত:
৫ অক্টোবার ২০২৩, ১৬:৪৪

সংগৃহিত ছবি

চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানা পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল পার্কভিউতে হৃদরোগ জনিত সমস্যায় তার মৃত্যু হয়। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।

চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ ছাড়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি-উত্তর) পংকজ দত্ত।

নিহতের ছেলে ক্যাপ্টেন নাফিস শহিদ বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে চান্দগাঁও থানার দুজন সহকারী উপপরিদর্শক গিয়ে আমার বাবাকে থানায় নিয়ে আসেন। সঙ্গে সঙ্গে আমার চাচারা থানায় যান। উনি হার্টের পেশেন্ট, ওনার ইনহেলার আর মেডিসিন লাগে সবসময়। বাবাকে থানায় নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মূলফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইনহেলার ও মেডিসিনও বাবার কাছে পৌঁছাতে দেয়নি। পরে ১২টার দিকে বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ঢাকায় ছিলাম। আমাদের জমি নিয়ে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে বিরোধ ছিল। তবে সাম্প্রতিক কোনো মামলার বিষয়ে আমরা শুনিনি। এমনকি আমার বাবা আদালত থেকে কোনো নোটিশও পাননি।’

দুদক কর্মকর্তা শহিদুল্লাহকে পরিকল্পিতভাবে পুলিশ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ নিহতের আরেক ছেলে আসিফ শহিদের। তিনি বলেন, ‘কোনো ওয়ারেন্ট না দেখিয়েই ধস্তাধস্তি করে বাবাকে নিয়ে গেছে তারা। বাবা দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। ন্যূনতম সম্মানটা উনাকে দেয়নি তারা। মার্ডার করেছে তারা, স্প্রেটা পর্যন্ত দিতে দেয়নি। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’

আসিফ শহিদ আরও বলেন, ‘বাবাকে দুদিক থেকে দুজন ও একজন পেছনে শার্টের কলার ধরে ছিলেন। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা যেখানে যেখানে আছে সেটা পয়েন্ট আউট করে সেখান দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে গেছে।’

পুলিশের এডিসি পংকজ দত্ত বলেন, একটি সিআর মামলায় রাতে তাকে গ্রেফতার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের ১৫ মিনিট পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তবে নিহতের সঙ্গে কোনো ধরনের অসদাচারণ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন চান্দগাঁও থানার ওসি খাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ওনাকে গ্রেফতারের পর খারাপ লাগছে বলে জানান। তখন আমার কক্ষে এনে বসিয়েছি। 

পরে তার ভাইদের জানিয়ে তারাসহ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেছেন। এই ঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

এদিকে, এই ঘটনায় চান্দগাঁও থানার দুই এএসআইকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার এম এ মাসুদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে বৃহস্পতিবার তাদের প্রত্যাহার করে দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

প্রত্যাহার হওয়া দুই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন চান্দগাঁও থানার এএসআই মো. ইউসুফ আলী ও এটিএম সোহেল রানা।

সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) স্পিনা রানী প্রামাণিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।  তিনি বলেন, প্রশাসনিক কারণে চান্দগাঁও থানায় কর্মরত দুই এএসআইকে প্রত্যাহার করে দামপাড়া পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। 

এ ছাড়া এই ঘটনা খতিয়ে দেখতে বুধবার তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিএমপি।

এর আগে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এএএসআই ইউসুফ আলী ও এটিএম সোহেল রানা চান্দগাঁও থানা থেকে এক কিলোমিটার দূর থেকে দুদকের অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাকে গ্রেফতার করেন। গ্রেফতারের এক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ হেফাজতে তার মৃত্যু হয়।

মামলার এজাহার ও গ্রেফতার পরোয়ানার তথ্য অনুযায়ী, গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম ৬ষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে ৩২৩ (মারধর) ও ৫০৬ (২) (ভয়ভীতি প্রদর্শন) ধারায় মামলা করেন রণি আক্তার তানিয়া (২৬) নামে এক নারী। মামলায় ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লা ও তার শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারকে আসামি করা হয়। 

গত ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানাটি গত ১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানায় পৌঁছায়। পরোয়ানাপত্র পাওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
 

প্রিয় নওগাঁ/এফএস


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর